এ দেশের অনেক নারীই চলেন মনের জোরে। শরীরটারও যে একটু যত্ন প্রয়োজন, সে কথা অনেকে মানতেই নারাজ। নিজের খাওয়া–দাওয়ায় সব থেকে বেশি অবহেলা হয়তো আমরা নিজেরাই করে চলি দিনের পর দিন। তবে কিনা আরেকজনের যত্ন সুনিশ্চিত করতে হলে নিজের শরীরটা ঠিক রাখা আবশ্যক।
সুষম খাবার খেতে হবে আপনাকেও। সন্তানকে এক গ্লাস দুধ দিচ্ছেন, নিজের জন্য এক কাপ তো রাখুন অন্তত। শরীরচর্চা করা চাই। নিদেনপক্ষে সপ্তাহে পাঁচটি দিন। চাইলে জিমে যেতে পারেন। পথে একটু হাঁটতে পারেন। এমনকি বাড়ির ছাদে, বারান্দায় কিংবা ঘরের মধ্যেও হতে পারে কিছু ব্যায়াম। গরম চলে এসেছে। পানি পান করুন প্রচুর।
সুস্থতা ও সৌন্দর্য
রূপচর্চাকে হয়তো আজও কেউ কেউ নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। তাতে কী! সৌন্দর্যের উৎস তো আপনার মন। নিজের জন্যই নিজের যত্ন নিন। নিজের যত্ন যে কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য, তা তো নয়। অন্তরের স্বস্তি এবং আরামের জন্যই নিজের যত্ন নিতে হয়। নিজের ভেতর যে উদ্যম ও প্রাণশক্তির প্রয়োজন, তা পাওয়ার জন্য নিজের যত্নে একটু সময় ব্যয় করা প্রয়োজন বলেই জানালেন রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
ছুটির দিনের প্রথম ভাগে বা শেষ ভাগে নিজের জন্য একটু সময় বের করতে পারেন। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের রাতটিতে মাথায় একটু উষ্ণ তেল মালিশ করতে পারেন। সকালে উঠে চুলে আর মুখে একটা প্যাক লাগিয়ে ফেলতে কিন্তু খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। চুল রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে পড়লে পাকা কলা আর টকদই (সমপরিমাণ) দিয়ে প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন। চুল পড়ার সমস্যা থাকলে সমপরিমাণ (গুঁড়া বা বেটে নেওয়া) আমলকী, হরীতকী আর বহেরার সঙ্গে প্রয়োজনমতো টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ফেলুন। মাথার ত্বক ও চুলে প্যাক লাগানো হয়ে গেলে একটা ফেসপ্যাক লাগিয়ে ফেলুন। ১ টেবিল চামচ দুধের সর আর আধা চা-চামচ হলুদ গুঁড়া দিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন। সারা সপ্তাহের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে কাজে দেবে। প্যাক লাগানোর ২০ মিনিট পর গোসল করে ফেলুন। সতেজ বোধ করবেন। গোড়ালি পরিষ্কার রাখতেও ভুলবেন না। ম্যানিকিওর, পেডিকিওর, বডি ম্যাসাজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবাও নিতে পারেন। অন্যান্য যত্নের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রামও নিতে হবে অবশ্যই।
মনটা ভালো তো?
এই তো সেদিন এক নারী আক্ষেপ করছিলেন বই পড়ার সুযোগ করে উঠতে পারছেন না বলে। আয়েশি দুপুরে প্রিয় বইয়ের দুটি পাতা ওলটাতে বা পড়ন্ত বিকেলে নিজের পছন্দের গান শুনতে কি জবরদস্তি করে আয়োজন করতে হয়? থাকুক না নিজের একটা ছোট বাগান, কিছু বইয়ের সংগ্রহ, কিছু ভালো লাগার আয়োজন। আপনি ভালো থাকলে অন্যের সামনে হয়ে উঠতে পারবেন ‘রোল মডেল’।