যত্ন না নিলে রিবন্ডিং করানোর পর চুলের ক্ষতি হতে পারে
ঢেউখেলানো চুলের সৌন্দর্যই আলাদা। তবে অনেকে আবার এমন চুল পছন্দ করেন না। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া চুল তখন সোজা করার তোড়জোড় শুরু হয়। একেই বলে রিবন্ডিং। রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার করে তখন রুক্ষ কোঁকড়ানো চুল করা হয় নমনীয় ও সোজা, দীর্ঘদিন পর্যন্ত এটা বজায় থাকে। ১৯৯৬ সালে জাপানে উদ্ভাবন হলেও ২০০১ সালে ফিলিপাইনে চুলের রিবন্ডিং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এ প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক দিকগুলো অনেক সময় ঢাকা পড়ে যায়। চুলের মান, কোন উপকরণ ব্যবহার করছেন, কোথায় করাচ্ছেন এবং পরবর্তী সময়ের যত্নের ওপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক ফলের বিষয়গুলো অনেকটা নির্ভর করে।
ঢেউখেলানো চুলের সৌন্দর্যই আলাদা। তবে অনেকে আবার এমন চুল পছন্দ করেন না। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া চুল তখন সোজা করার তোড়জোড় শুরু হয়। একেই বলে রিবন্ডিং। রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার করে তখন রুক্ষ কোঁকড়ানো চুল করা হয় নমনীয় ও সোজা, দীর্ঘদিন পর্যন্ত এটা বজায় থাকে। ১৯৯৬ সালে জাপানে উদ্ভাবন হলেও ২০০১ সালে ফিলিপাইনে চুলের রিবন্ডিং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এ প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক দিকগুলো অনেক সময় ঢাকা পড়ে যায়। চুলের মান, কোন উপকরণ ব্যবহার করছেন, কোথায় করাচ্ছেন এবং পরবর্তী সময়ের যত্নের ওপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক ফলের বিষয়গুলো অনেকটা নির্ভর করে।
রিবন্ডিংয়ের আগে প্রথমেই কোনো বিশেষজ্ঞের কাছে পুরো বিষয়টি বুঝে নেওয়া দরকার। চুলের ধরন অনুযায়ী উপকরণ ব্যবহার করা না হলে, চুল পড়ে যাওয়া বা ক্ষতির আশঙ্কা অনেক গুণ বেড়ে যায় বলে জানান শারমীন কচি। চুলের ধরন বুঝে কোন কোন রাসায়নিক ব্যবহার করা উচিত এবং রিবন্ডিংয়ের আগে ও পরে কোন সেবাগুলো নেওয়া প্রয়োজন তা একজন বিশেষজ্ঞই সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন।
প্রস্তুতি
রিবন্ডিংয়ের আগে চুলগুলোকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। এতে যেমন রিবন্ডিং ঠিকঠাক মতো হবে, তেমনি রিবন্ডিংয়ের পর চুলের ক্ষতিও হবে কম। হেয়ার রিবন্ডিয়ের আগে চুলকে প্রস্তুত করে তুলতে তিনটি ধাপ অবশ্যই অনুসরণ করার পরামর্শ দেন শারমীন কচি। রাসায়নিকের সাহায্যে চুল সোজা করার পাশাপাশি আলাদা ঔজ্জ্বল্য যুক্ত করতে পারেন। প্রথমে সুন্দর থাকলেও কিছুদিন পর চুল প্রাণহীন ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। যাঁরা একাধিকবার রিবন্ড করান, তাঁদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা বেশি হতে পারে। রিবন্ডিংয়ে সাধারণত দুই ধরনের রাসায়নিক ক্রিম ব্যবহার করা হয়। ক্রিম সফটনার ও নিউট্রালাইজার। ক্রিম সফটনার চুলের পুরোনো বন্ধনকে ভেঙে রিবন্ডিংয়ের জন্য প্রস্তুত করে। নিউট্রালাইজার চুলে তৈরি করে নতুন বন্ধন। এটি সময়সাপেক্ষ ও কয়েকটি ধাপে করতে হয়। প্রয়োজন হয় বেশ কয়েক ধরনের সেবার। রাসায়নিক উপাদানগুলো হওয়া চাই খুব ভালো মানের। ভঙ্গুর চুল রিবন্ডিংয়ের আগে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় সেবা বা যত্ন নিন। প্রো-কেরাটিন ও ইনসেল ট্রিটমেন্ট দিয়ে চুল মজবুত করে রিবন্ডিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়। চুলের ধরন অনুযায়ী রিবন্ডিংয়ের ৭ থেকে ৩০ দিন আগে দরকারি সেবাগুলো নিয়ে নিন।
সতর্কতা
চুলে রং করা থাকলে রিবন্ডিংয়ের জন্য অন্তত ছয় মাস অপেক্ষা করুন। চুলে মেহেদি বা হেনা লাগানোর দুই মাস পর রিবন্ড করানো উচিত। নতুন চুল গজাচ্ছে এমন সময় রিবন্ডিং না করানোই ভালো।
রিবন্ডিংয়ের পর চুলের জন্য যে বাড়তি যত্ন নেওয়া হয়, তা মূলত প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক। রিবন্ডিং চুলের এই অতিরিক্ত যত্ন চুলের রুক্ষতা বা ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করে। কিছু কাজ থাকে যা নিয়মিত করা প্রয়োজন। আলস্য করে বাদ দিতে গেলে চুলের সৌন্দর্য তো কমবে, সেই সঙ্গে চুলের এমন ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে, যার কোনো প্রতিকার নেই বলে জানান শারমীন কচি। রিবন্ডিংয়ের পর প্রথম তিন মাস চুলের যত্নে খুব বেশি মনোযোগী হতে হবে। কেননা, এই তিন মাস চুল যেমন রাখবেন, পরবর্তী সময়ে চুল অনেকটা সেরকমই থাকবে।
শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার
রিবন্ডিং চুলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। তবে সব ধরনের শ্যাম্পু রিবন্ডিং চুলের উপযোগী নয়। এ ক্ষেত্রে আপনি মাইল্ড শ্যাম্পু বা রিবন্ডিং চুলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারবেন। বাজারে এ ধরনের শ্যাম্পু এখন অনেকটাই সহজলভ্য। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে আপনি লিভ-ইন-কন্ডিশনার বা রিবন্ডিং চুলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি যেকোনো কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। যেসব শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার রিবন্ডিং চুলের যত্ন নিতে আলাদাভাবে তৈরি হয়, সেগুলোতে রিবন্ডিং চুলের উপযোগী সব উপাদান যোগ করা থাকে। এগুলো ব্যবহারে চুলের ক্ষতি হওয়ার কোনো শঙ্কা থাকে না। সেই সঙ্গে চুলও থাকে সিল্কি, নমনীয় ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। অনেকে রিবন্ডিংয়ের পর চুল আর নিয়মিত আঁচড়াতে চান না। দিনে অন্তত দুবার চুল আঁচড়াতেই হবে। চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে প্রথমে সম্পূর্ণ চুল উল্টে ও পরে স্বাভাবিকভাবেই আঁচড়ে নিন। আঁচড়ানোর সময় অবশ্যই মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করতে হবে।
শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারের পর চুলে হেয়ার সিরাম ব্যবহার করুন। এটি আপনার চুলে একটি স্তর তৈরি করে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখবে। হেয়ার সিরাম ব্যবহারে চুলে জট হয় কম। সেই সঙ্গে এটি আপনার চুলকে করে তুলবে চকচকে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।