চৈত্রের মাটিফাটা রোদ্দুর নয়, ভাদ্রের তালপাকা গরমও এখন নয়; তবু আশ্বিন মাসের আবহাওয়ায় স্বস্তি মিলছে না। এ রকম গরমে আরাম পাওয়া যায় সুতির পোশাকে। সুতির পোশাকের সুবিধা, মানিয়ে যায় সব জায়গাতেই। অফিসে, পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেলে ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠা যায় ভিন্ন ধাঁচের সুতি পোশাকেও। আবার এ পোশাকের নকশায় সহজেই ফুটে ওঠে দেশজ ঐতিহ্য আর হাল ফ্যাশনের আধুনিকতা।
অনেকের ধারণা সুতি কাপড়ের পোশাকে নিজেকে স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করা যায় না। আসলে ধারণাটা ভুল। বিবি প্রোডাকশনসের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার বিবি রাসেলের মতে, প্রজন্মই ভবিষ্যৎ। সৃষ্টিশীল ফ্যাশন ডিজাইনাররা ভাবনার বৈচিত্র্যে তৈরি করেন ফ্যাশনেবল পোশাক, যা নতুন প্রজন্মের উপযোগী। আসলে সব প্রজন্মের উপযোগী ফ্যাশনেবল পোশাকও তৈরি করা যায় ডিজাইনে নতুনত্ব এনে। বিবি রাসেল নিজে কলকাতার বরেণ্য অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য পোশাকের ডিজাইন করেছেন, যেটিতে শিল্পীর বয়স, ব্যক্তিত্ব, অবস্থান—এ রকম দিকগুলো বিবেচনায় রেখেছিলেন। আবার কিছু কিছু পোশাকে তরুণ প্রজন্মের পছন্দ ও চাহিদার কথা মাথায় রেখে ভিন্নতা নিয়ে এসেছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা জানালেন, সুতি পোশাক আরামদায়ক, সহজেই ঘাম শুষে নিতে পারে। কৃত্রিম তন্তুর তৈরি পোশাক সেভাবে ঘাম শোষণ করতে পারে না। আবার খাদি কাপড় সুতি হলেও সেটি মোটা। তবে বিবি রাসেল জানালেন, হাতে তৈরি মোটা খাদি আরামদায়ক। এর শোষণক্ষমতা ভালো। বাংলাদেশে পাতলা খাদি তৈরির যন্ত্র নেই।
দেশালের ডিজাইনার ইশরাত জাহান জানালেন, সুতার কাউন্ট যত বেশি হয়, কাপড় তত পাতলা হয়। তবে কাপড়ের এক ইঞ্চিতে যতটা সুতা থাকে (সানা), তার ওপরও কাপড়ের পুরুত্ব নির্ভর করে। সানা যত বেশি হয়, কাপড় তত পুরু বা মোটা হয়।বুননের সময় কাপড়ে তোলা নকশাও পোশাকে আনে বৈচিত্র্য (যেমন ডবি নকশা)। ইশরাত জাহান জানালেন, খাটো, মধ্যম ও লম্বা—এই তিন ধরনের টপই চলছে এখন ফ্যাশনে। অ্যাপ্লিক, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট বা হাতে করা সুতার কাজ থাকছে পোশাকগুলোতে। কিশোরী থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সীদের জন্য সুতির স্কার্ট রয়েছে দেশালে।
বিশ্বব্যাপী সুতি পোশাকের চাহিদাও বেশ। ক্লাবহাউসের হেড অব ডিজাইন মো. আবিদ শেখ জানালেন, সুতি পোশাকে নানানভাবেই ভিন্নতা আনা সম্ভব। সুতি কাপড়ে তৈরি লম্বা শার্ট, পাঞ্জাবি কাটের টপ, টিউনিক ও পশ্চিমা ধাঁচের টপের এখন বেশ চাহিদা।